রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন কমিটির উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম। উপাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে নারীকে শুধুমাত্র অফিসের কাজ-কর্ম করার সুযোগ দিলেই হবে না, আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন করতে হবে। রবীন্দ্রনাথের মূল ভাবনাটি ছিল নারীর জন্য গৃহের বাইরের জগতকে উন্মোচিত করা এবং নারীকে তার সামর্থ্যের প্রমাণ করবার সুযোগ দেওয়া। তিনি আরও বলেন, যে প্রাচীনত্ব ও হিংস্রতা আমাদের মধ্যে ছিল সেখান থেকে বের হয়ে এসে একটি দেশকে পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়া, রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেওয়া- সেই কাজটি বাংলাদেশ করতে পেরেছে, আর সেই কারণেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জননেত্রী হয়েছেন, তিনি অনন্য হয়েছেন।

বিশ্বে তাঁর একটি সুনাম তৈরি হয়েছে, বিশ্বে তিনি একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। কারণ, তিনি বাংলাদেশের নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের একটি বিপুল পরিবর্তন করেছেন এবং নারীদের যে ক্ষমতায়ন সেই ক্ষমতায়নের একটি বিপ্লব ঘটিয়েছেন। এটি বাংলাদেশের একটি অর্জন এবং এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ যে প্রাচীনতা থেকে আধুনিক ধারায় গিয়েছে; আমাদের টেকনোলজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট হয়েছে; আমাদের যে অর্থনৈতিক পরিবর্তন হচ্ছে, আমরা মধ্য আয়ের দেশে যাচ্ছি, তার থেকেও একটি বড় উন্নয়ন ঘটেছে সেটি হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদান রেখেছেন।

আমাদের বিশ্বাস রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ব্রত নেবে আজকের এই রোকেয়া দিবস থেকে আমরা নারীকে নারী নয় আমরা নারীকে সহকর্মী হিসেবে দেখতে চাই, নারীকে মানুষ হিসেবে দেখতে চাই, ব্যক্তি হিসেবে দেখতে চাই। আমি নিজে এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আপনাদের সঙ্গে আছে আপনাদের অগ্রযাত্রা নির্বিঘ্ন হোক।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বেগম রোকেয়ার জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন নারী আন্দোলনের সংগঠক অ্যাডভোকেট দিল সিতারা বেগম (চুনি)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় মহিলা ক্লাবের সভাপতি ড. নাসরিন লুবনা। সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, ৯৯ ভাগ নারী পেছনে পড়ে আছে। বেগম রোকেয়া বলেছেন, ‘আমরা সহযোগিতা না পেয়ে পশ্চাদগামী হয়েছি’। আমরা যদি সকলে এই শপথ করি যে, আজকে থেকে কন্যাশিশুর উন্নয়নের জন্য সমস্ত রকম সুবিধা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করব এবং শিশুর মাকে তার যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করব।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ সোহরাব আলী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ ফখরুল ইসলাম, সকল বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।